নুরুজ্জামান লাবু, একমাত্র সাংবাদিক, যিনি গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্তোরাঁতে জঙ্গি হামলার ঘটনা খুব কাছ থেকে কাভার করেছেন। তাঁর সেই অভিজ্ঞতা আর পরবর্তী দীর্ঘ অনুসন্ধানের আলোকে, তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে লিখেছেন-‘হোলি আর্টিজান-একটি জার্নালিস্টিক অনুসন্ধান’।
নিজস্ব প্রতিবেদক
(প্রিয়.কম) নুরুজ্জামান লাবু, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতায় নিয়োজিত রয়েছেন। অপরাধ-বিষয়ক সাংবাদিক হিসেবে তার রয়েছে সাড়া জাগানো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার ঘটনাবলী নিয়ে তাঁর প্রতিবেদনসমূহ গভীরতা ও নৈর্ব্যক্তিকতার নিরিখে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
হামলার শুরু থেকেই তিনিই একমাত্র সাংবাদিক, যিনি খুব কাছ থেকে এই ঘটনা কাভার করেছেন। তাঁর সেই অভিজ্ঞতা আর পরবর্তী দীর্ঘ অনুসন্ধানের আলোকে, তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তিনি লিখেছেন-‘হোলি আর্টিজান-একটি জার্নালিস্টিক অনুসন্ধান’। অন্বেষা প্রকাশন (প্যাভিলিয়ন-১২) থেকে এবারের বইমেলায় বইটি প্রকাশিত হয়েছে। আর এ প্রসঙ্গেই প্রিয়.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
প্রিয়.কম: আপনি কখন জানতে পারলেন যে গুলশানে হামলার ঘটনা ঘটেছে?
নুরুজ্জামান লাবু: তখন রাত ৯টা কিংবা সোয়া ৯টা। চা খেতে অফিসের নিচে নেমেছি। তখন একটা মেসেজ পেলাম গুলশানে গোলাগুলি হচ্ছে। চা খেতে খেতে মেসেজটা ভেরিফাই করার চেষ্টা করছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে গুলশান এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ফোন দিচ্ছিলাম। কিন্তু সবার ফোন ব্যস্ত। একই সঙ্গে আমি আমার অফিসের এক সহকর্মীকে বললাম খোঁজ নেওয়ার জন্য। এর মধ্যে আমি গুলশানে দায়িত্বরত পুলিশের বিশেষ শাখা- এসবি’র এক কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে পেলাম। তিনি আমাকে বললেন তাড়াতাড়ি স্পটে আসেন। বড় ঘটনা। এরপরই ছুটে যাই ঘটনাস্থলে।
প্রিয়.কম: ঘটনাস্থলের কাছাকাছি যাওয়ার পর সেখানকার পরিবেশ কেমন দেখেছিলেন?
নুরুজ্জামান লাবু: কাছাকাছি যাওয়ার আগে পুলিশের বেশ কয়েকটি তল্লাসি চৌকি পাড় হতে হয়েছে। ঘটনস্থলের কাছাকাছি যাওয়ার পর দেখলাম অসংখ্য পুলিশের গাড়ি। রক্তাক্ত লোকজনকে বের করে নিয়ে আসা হচ্ছে। তার মানে সাড়ে ১০টায় যে পুলিশের ওপর জঙ্গিরা হামলা চালায় তার পরপরই আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছাই। রাতভর সেখানেই ছিলাম।
প্রিয়.কম: আচ্ছা, শ্বাসরুদ্ধকর সে সময়টা আসলে কেমন ছিল?
নুরুজ্জামান লাবু: ভীষণ উত্তেজনায় কাটছিল প্রতিটি মুহূর্ত। বাংলাদেশে এমন কোনও ঘটনা আগে ঘটেনি। আমিও কখনো কাভার করিনি। এমন একটা অবস্থা যে পুলিশের ব্যারিকেড থেকে বের হয়েও আসতে পারছি না। কারণ তাহলে আর ঢুকতে পারবো না। শেষে যখন জানতে পারি যে, ভোরের আলো ফোটার পর অভিযান হবে। তখন কিছুক্ষণের জন্য সেহরি খেতে বের হয়েছিলাম। পরে আবার চৌরাস্তায় যাই।
প্রিয়.কম: এরকম ঘটনায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের বিষয়টি তো বেশ চ্যালেঞ্জিং?
নুরুজ্জামান লাবু: হুম। চ্যালেঞ্জিং তো অবশ্যই। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একদিকে যেমন নিজের নিরাপত্তার দিকটি খেয়াল রাখতে হয় তেমনি আবার সর্বশেষ তথ্য জানাটা জরুরি। গণমাধ্যমগুলোতে এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলে কার আগে কে খবরটি পাঠককে জানাতে পারবে বা কে কত বেশি এক্সক্লুসিভ স্টোরি দিতে পারবে। এজন্য কিন্তু অনেক সময় ঝুঁকি নিয়েও কাজ করতে হয়।
প্রিয়. কম: ভোর থেকে অপারেশন শেষ হওয়া পর্যন্ত হোলি আর্টিজানের সামনের চৌরাস্তায় সাংবাদিক তো আপনি একাই ছিলেন। সেই অভিজ্ঞতাটা জানতে চাই।
নুরুজ্জামান লাবু: আমি সেহরির পর আবার যখন ৭৯ নম্বরের সেই চৌরাস্তায় যখন যাওয়ার চেষ্টা করি তখন দেখি কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। পরে আমি ও নূরুল আমিন নামে এক সহকর্মীসহ পাশের রাস্তা দিয়ে ইরানি অ্যাম্বাসির সামনে দিয়ে ব্যারিকেড পার হয়ে চৌরাস্তায় যাই। পুলিশ তখন গণমাধ্যমকর্মীদের দূরে সরিয়ে দিচ্ছিল। এর মধ্যে আমি গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ির পিছনে বসলাম। সেখানে আরও দুইজন সাংবাদিক এসে বসলেন। এর একটু পরেই টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সবাই যে যার গাড়িতে। আমাকে হয় বৃষ্টিতে ভিজতে হবে না হয় বেরিয়ে যেতে হবে। আমি চিন্তা করছিলাম একবার যদি বেরিয়ে যাই তাহলে আর ঢুকতে পারব না। আমি থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। শেষপর্যন্ত আমি সেখানে ছিলাম। আমি কমান্ডোদের অপারেশন শুরু করাটা নিজের চোখে দেখেছি। উত্তেজনায় আমার নিজের পা তখন থরথর করে কাঁপছিল। আমি নিজের মোবাইল ক্যামেরায় জিম্মিদের বেরিয়ে আসার দৃশ্য ধারণ করতে পেরেছিলাম।
প্রিয়.কম: যতটুকু জানি সকাল নাগাদ অভিযান শুরু হয়েছিল?
নুরুজ্জামান লাবু: সকাল সাতটা থেকে সোয়া সাতটা থেকে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা আসতে থাকে। আর তখন আমিও এমন ভাব নিয়ে আছি যেন আমিও গোয়েন্দা সংস্থার লোক। তো সেনা কমান্ডোরা যখন অভিযান শুরু করলো, আগেই বললাম উত্তেজনায় সে সময় আমার পা থরথর করে কাঁপছিল। অভিযানের পুরো সময়টা আমি ওই চৌরাস্তায় ছিলাম। বেশিরভাগ সাংবাদিকদের ঘটনাস্থল থেকে অন্তত দুই কিলোমিটার দুরে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। একপর্যায়ে ঠিক ৭টা ৪০ মিনিটে অপারেশন শুরু হলো। সাড়ে ৮টার দিকে তা শেষ হয়েছে।
প্রিয়.কম: তবে গুলশানের সেই হামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক হিসেবে বই লেখার ভাবনাটা কিভাবে মাথায় এলো?
নুরুজ্জামান লাবু: আমি ক্রাইম রিপোর্টিং করি অনেকদিন ধরেই। বিশেষ করে জঙ্গি বিষয়ক রিপোর্টিং করি। গুলশান বা হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর আমি মানবজমিন ছেড়ে বাংলা ট্রিবিউনে যোগদান করি। পেশাগত কাজে আমি অনেক এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদন করেছি। গুলশান হামলার পরে স্বাক্ষ্যদের যে জাবানবন্দি দিয়েছিল সেই প্রথম আমি কোনও নথি প্রকাশ করেছি। ১ জুলাই রাতভর জিম্মি অবস্থায় থাকা ভারতীয় নাগরিক সাত প্রকাশের পুরো জাবানবন্দিটা আমি প্রথম ব্রেক করি।
তারপর আমি এটা নিয়ে যত কাজ করছি; এতো বিশাল ক্যানভাসের ঘটনা ছোট ছোট রিপোর্টে তুলে আনা সম্ভব হয় না। তখন ভাবলাম এটা নিয়ে একটা অনুসন্ধানী বই হতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এরকম সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে বই রয়েছে। তখন ভাবলাম আমি একটি বই করতে পারি, যেগুলো তথ্য প্রকাশিত হয়েছে আর যেগুলো হয় নি সেই বিষয়গুলোসহ আমি একটা দীর্ঘমেয়াদি অনুসন্ধান শুরু করলাম।
লাইন বাই লাইন ঘটনাটা কিভাবে ঘটেছিল, প্রথম পুলিশ কর্মকর্তা কে গিয়েছিলেন, তার অভিজ্ঞতাটা কি; সে কি করেছে বা তারা কি দেখতে পেলেন? দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা যে মারা গেলেন সেই সিকোয়েন্সটা কি ছিলো? উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কি কৌশল নিয়েছিলেন। কেনই বা অভিযান চালাতে রাতভর অপেক্ষা করা হলো। আগাম গোয়েন্দা তথ্যে কি ছিল বা নব্য জেএমবির উত্থানটা কিভাবে হলো, তামিম চৌধুরী কে? মানে সবকিছু মিলিয়ে একটা চিত্র একসঙ্গে দাঁড় করানো।
এছাড়া বিশেষ করে হোলি আর্টিজানে রাতভর যারা জিম্মি ছিলেন তাদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা বিচ্ছিন্নভাবে একটু-আধটু প্রকাশ হয়েছে। এদের অনেককেই সাংবাদিকরা রিচ করতে পারেন নি। আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। যাদের রিচ করতে পেরেছি তাদের সাক্ষাতকার নিয়েছি। বাকিদের সেই ঘটনার বর্ণনার নথিপত্র সংগ্রহ করেছি। সব মিলিয়ে আমি চেষ্টা করেছি পুরো ঘটনাটা তুলে ধরতে।
প্রিয়.কম: হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনায় তো সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি হলো হাসনাত করিম ও তাহমিদ। জিম্মি হলেও পরবর্তীতে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এই দুজনের বিষয়টি কিভাবে উঠে এসেছে আপনার বইতে?
নুরুজ্জামান লাবু: ঠিক বলেছেন। হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিব খানের কয়েকটি ছবি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাহমিদ মুক্তি পেলেও হাসনাত এখনো জেলে রয়েছে। আমার বইয়ে হাসনাত তাহমিদের বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষণের পাশাপাশি তাদের নিজের হাতে লেখা সেই রাতের বর্ণনা রয়েছে। যেখানে পাঠকদের অনেক প্রশ্নের উত্তর রয়েছে। তারা আটক থাকার কারণে এই বিষয়টি কেউ রিচ করতে পারেনি। আমার বইয়ে কিন্তু তাদের বর্ণনা রয়েছে।
প্রিয়.কম: কিন্তু এতো অল্প সময়ে কিভাবে এতো বড় একটি ঘটনার বিষয়বস্তু তুলে ধরলেন?
নুরুজ্জামান লাবু: আমার প্রাথমিক একটা টার্গেট ছিলো বইমেলা কেন্দ্রীক। এজন্য আমি পরিকল্পনা করে কাজ করেছি। এই ছয় মাসে আমি আসলে কি কি করতে পারব এটার একটা পরিকল্পনা করেছি। আমি কিছু বিষয় বাছাই করে নিয়েছি। আবার কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো বাদ দিয়ে রেখেছি সেগুলো নিয়ে পরবর্তী অনুসন্ধানে কাজ করব। সেটার জন্য আরও অনেক সময় লাগবে। ছয়মাসে একটা পূর্ণাঙ্গচিত্র আর ধারণা থাকছে। এতে বেশি ফোকাস হয়েছে সেই রাতে হোলি আর্টিজানের বাইরের উৎকণ্ঠাটা কেমন ছিল আর ভেতরের পরিবেশটা কেমন ছিল সেই বিষয়টা।
প্রিয়.কম: পাঠাকরা কি এতে রোমাঞ্চকর লেখার বর্ণনা পাবে, নাকি ভ্যারিফাইড অনেক কিছুই পাবে এ বইটিতে?
নুরুজ্জামান লাবু: পাঠকরা দুটোই পাবে। রোমাঞ্চকর বর্ণনাও যেমন পাবে তেমনি ভ্যারিফায়েড সব তথ্যও পাবে। যেমন ধরেন-একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সে কিভাবে সেখানে গেলেন কিভাবে অভিযান পরিচালনা করেছে। সেটি তো এখনও কেউ প্রকাশ করে নি। এটা বের করে আনাও এক ধরনের অনুসন্ধান। এখানে অপ্রকাশিত অনেক তথ্য রয়েছে।
আর সেগুলো ভ্যারিফাইড করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। যার কারণে ছোট একটি তথ্য সংগ্রহের জন্য আমাকে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়েছে। হয়তো এক লাইনের একটা তথ্য যার কাছে তথ্যটি আছে তার পিছনে আমাকে সাতদিন ঘুরতে হয়েছে।
যার কারণে পাঠকেরা হোলি আর্টিজানের পুরো একটা চিত্র খুঁজে পাবে। অজানা আরও অনেক কিছুই এতে রয়েছে। আর জঙ্গিরা যে হামলা চালিয়েছে তার আলাদা একটা নাম ছিল- অপারেশন গাজওয়াত। এটা তো আগে কোথাও প্রকাশিত হয় নি। এইরকম অনেক কিছুই আছে।
প্রিয়.কম: শুনেছি বইটির ইংরেজি ভার্সন প্রকাশ করবেন?
নুরুজ্জামান লাবু: আমার ইচ্ছে রয়েছে বইমেলার পরপরেই এর কাজ শুরু করব। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে হোলি আর্টিজানে হামলার এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বৃহত্তর পাঠক গোষ্ঠীর জন্য ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশিত হবে। এছাড়া এক বছর পর পরিবর্ধিত ও সংশোধিত একটা সংস্করণ প্রকাশ করার ইচ্ছা রয়েছে। কারণ এই মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত যখন শেষ হবে তখন আরও অনেক তথ্য প্রকাশিত হবে।
প্রিয়.কম: পেশাগত দায়িত্বপালন এর পাশাপাশি বইটি লিখেছেন। এক ধরনের চাপও ছিল। সে সময়গুলো আসলে কেমন ছিল?
নুরুজ্জামান লাবু: এটা তো আসলে গল্প উপন্যাস এরকম কিছু না। প্রত্যেকটা তথ্য সংগ্রহ করতে হয়েছে, তারপর আমাকে লিখতে হয়েছে। আমার যে বস হারুণ ভাই, তাকে বিষয়টির জানিয়েছিলাম। তিনি আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। আমার ক্রাইম সেকশনের কলিগরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন।
আর যেহেতু আমি এ মাধ্যমেই কাজ করি (ক্রাইম রিপোটিং মানে অনুসন্ধানি সাংবাদিকতা)। যার কারণে আসলে আমাকে সেভাবে বেগ পেতে হয় নি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে করেছি। তবে রাতের বেলা বাসায় গিয়ে আমাকে সেগুলো আবার সুন্দর করে লিখতে হতো। সেভাবেই আমি আমার মত করেই কাজ করেছি।
প্রিয়.কম: তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বাজে কোন অভিজ্ঞতা হয়েছে?
নুরুজ্জামান লাবু: অভিজ্ঞতা তো অনেক রয়েছে। এই যেমন আমাকে কখনো কখনো সাংবাদিকতার পরিচয় আড়াল করতে হয়েছে। একটা ঘটনা বলতে পারি। সাংবাদিক হওয়ার কারণে কেউ একজন আমাকে সাক্ষাতকার দিচ্ছিলেন না। পরে আমি গবেষক হিসেবে তার কাছে যাই। কিন্তু কেন জানি তিনি আমাকে সাংবাদিক হিসেবেই সন্দেহ করছিলেন।
বারবার জিজ্ঞাসা করছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে ফোন করছিলেন। কারণ তার ফোনে আমার নাম্বার সেইভ ছিল। আমি বিষয়টি টের পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমার ফোন এভিয়েশন মুডে রাখলাম। তিনি ফোন বিজি পেয়ে পরে সাক্ষাতকার দিলেন। এটা কিন্তু আনএথিকাল কিছু না। অনুসন্ধানি সাংবাদিকতায় এরকম করতে হয় অনেক সময়।
আর যেহেতু অনেক দিন ধরেই আমি এই মাধ্যমে কাজ করছি। যার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকের সঙ্গে আমার সখ্যতা রয়েছে। এটাকে বলে সোর্স। তারা আমার ওপর আস্থা রাখতে পেরেছিলেন। যদিও কেউ কেউ পরে সমস্যা হয় কিনা তা নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় ছিলেন। সব মিলিয়ে অনেক পরিশ্রম করে কাজটি সম্পন্ন করেছি আমি।
প্রিয়.কম: প্রিয়কে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
নুরুজ্জামান লাবু: প্রিয়.কমকেও।
সম্পাদনা: গোরা
https://www.priyo.com/articles/nuruzzaman-labu-14-february-2017214